Header Ads

পাকিস্তানের সাপ্তাহিক মূল্যস্ফীতি

পাকিস্তানের সাপ্তাহিক মূল্যস্ফীতি

পাকিস্তানের ঘাড়ে যেন মূল্যস্ফীতির জোয়াল চেপেছে, যা প্রতি সপ্তাহেই যেন এইরকম চেপে বসছে। ৯ মার্চ সম্পন্ন হওয়ার সপ্তাহে দেশটির মূল্যস্ফীতি ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। গত বর্ষের একই টাইমের তুলনায় সেই সপ্তাহে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার হয়ে গিয়েছে ৪২ দশমিক ২৭।


পাকিস্তান ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের পরিসংখ্যানে এ ইনফরমেশন পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও সবজির দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি এতটা অসহনীয় হয়ে উঠেছে।


তবে এখানেই সমাপ্ত নয়, দেশটির পপুলার দৈনিক দ্য ডনের সংবাদে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের স্বল্পমেয়াদি মূল্যস্ফীতি যে সেনসিটিভ মূল্য ইনডেক্সে (এসপিআই) পরিমাপ করা হয়, তা এইরকম  হতে পারে। বিশেষ করে রুপির অবমূল্যায়ন, জিএসটি বৃদ্ধি ও জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে মূল্যস্ফীতির ফাঁস আরও শক্ত থেকে পারে। কিছু দিন আগে এসব বাড়লেও সরকারী পরিসংখ্যানে তার ছাপ পড়েনি।


তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১ দশমিক ৩৭।


এর প্রথমে ২০২২ বছরের ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪২ দশমিক ৭০। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে মূল্যস্ফীতির হার ছিল সবচেয়ে বেশি।


এসপিআই ঝুড়িতে যে ৫১টি পণ্যের প্রাইস গণনা করা হয়, তার মধ্যে ২৯টি পণ্যের দর বেড়েছে, ৮টি পণ্যের দাম কমেছে আর বাকি ১৪টি পণ্যের দাম স্থিতিশীল ছিল।


বড় ধরনের সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। বিদেশি কারেন্সির রিজার্ভ কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে। মূল্যস্ফীতি গগন ছুঁয়েছে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দ্বারস্থ হয় তারা। অথচ তারা যেন কিছুতেই পাকিস্তানের কাছে ধরা দিচ্ছে না। আইএমএফের সঙ্গে কর্মী পর্যায়ের  না হওয়া প্রসঙ্গে পাকিস্তান সরকারের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আইএমএফ জনসমক্ষে বলছে গরিববান্ধব নিয়ম করতে; অথচ আদতে তারা যা বলছে, তাতে দৈন্য মানুষের জীবন আরও শক্ত হয়ে যাবে।


আইএমএফ বর্তমান চাচ্ছে, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া অন্য যেসব বিষয়ে তাদের অগ্রাধিকার সংশোধন হয়েছে, সেগুলো হলো কারেন্সির বিনিময় হার নির্ধারিত না রাখা, যাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত আফগানিস্তানে অর্থ পাচার না হয়, বন্ধুরাষ্ট্রগুলো পাকিস্তানকে সহায়তা করবে—এই মর্মে লিখিত নিশ্চয়তা ও বিদ্যুতে সারচার্জের বিধান অব্যাহত রাখা।


দ্য ডন এইরকম জানিয়েছে, আইএমএফ ধনীদের উপর করারোপের কথা বললেও সম্প্রতি বিক্রয় কর বৃদ্ধির জন্য চাপাচাপি করছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়বে। কিন্তু ব্যাংকের মতো ইন্সটিটিউটের বিদেশি কারেন্সি লেনদেনে করারোপের প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে তারা। আবার বানের ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে শীর্ষ আয়ের মানুষের উপর লেভি আরোপেরও বিরোধিতা করছে আইএমএফ।


এদিকে ইকোনমিক টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক দীনতা মোকাবিলায় পাকিস্তান গত ৭৫ বছরে ২৩ বার আইএমএফের বেইল দৈবশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তি প্যাকেজ সহযোগিতা নিয়েছে।


এ প্রসঙ্গে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সাবেক প্রাদেশিক শাসনকর্তা মুর্তজা সায়্যিদ জিও নিউজকে বলেছেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে আমরাই হলাম আইএমএফের সবচেয়ে রেগুলার গ্রাহক।’ 


প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইন্ডিয়ার সাথে তুলনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সেইম সাথে স্বাধীনতা অর্জন করা ভারত মাত্র সাতবার আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে। ১৯৯১ সালে মনমোহন সিংহের যুগান্তকারী পাল্টানোর পর হতে তারা একবারও আইএমএফের কাছে যায়নি।’



No comments

Powered by Blogger.