রাত ১টায় আসছে বনবিবি

যান্ত্রিক কোলাহলের মাঝে প্রকৃতির গান নিয়ে আসছে কোক স্টুডিও বাংলা। আজ রাত একটায় কোক স্টুডিও বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে অব্যাহতি পাবে ‘বনবিবি’। দ্বিতীয় মৌসুমের দ্বিতীয় গানের ১৫ সেকেন্ডের ১টি প্রচারণামূলক ভিডিও প্রকাশ করার পর পুরো গানটি শোনার জন্য কর্ণ খাড়া করে রয়েছেন শ্রোতারা।

চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার স্থানীয় ভাষায় গাওয়া সংগীত ‘মুড়ির টিন’ বাজিয়ে দ্বিতীয় মৌসুমের যাত্রা আরম্ভ করে কোক স্টুডিও বাংলা। ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী গানটি প্রকাশের পর শ্রোতাদের ভিতরে সাড়া ফেলেছে। সেটির রেশ কাটার আগেই আসছে ‘বনবিবি’, গানটির দায়িত্ব পেয়েছে ব্যান্ড মেঘদল। গানের কথা লিখেছেন শিবু কুমার শীল ও মেজবাউর রহমান সুমন, সুর বেঁধেছেন শিবু কুমার শীল। মেঘদলের সংগীতায়োজনে গানটি গেয়েছেন শিবু কুমার শীল ও জহুরা বাউল, সাথে রয়েছে গানের দল ঘাসফড়িং।

কী থাকছে গানে? কণ্ঠসংগীত প্রকাশের আগেই গান–রহস্য খোলাসা করার জন্য নারাজ তারা। কিন্তু ১ম আলোর পাঠকদের জন্য  নিয়ে খানিকটা অনুমান দিলেন শিবু কুমার শীল। জানালেন, বনবিবি মূলত প্রাণ ও প্রকৃতির গান। প্রাচ্যের পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক চরিত্রদের গানে তুলে ধরেছে মেঘদল, সঙ্গে এস এম সুলতানের শততম জন্মবর্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বলা হয়েছে। ‘লোকগাথা ধরনের গান। এর আগে মেঘদলের গানে বারবার শহরের কথা এসেছে। কোক স্টুডিও থেকে ইনভাইট পাওয়ার পর আমাদের উপর কোনো চাপ ছিল না। আমরা নিজেরাই ঠিক করলাম, কী করতে চাই। প্রচুর প্রথমে “ওম” নামের ১টি গানের কম্পোজিশন করেছিলাম, অতঃপর দুই দশকেও আর কোনো কম্পোজিশন করিনি। ভাবলাম, আমরা এ সময়ের প্রকৃতি, জগৎ নিয়ে গান করতে চাই,’ বলেন শিবু কুমার শীল।

কোক স্টুডিও বাংলার এফবি পেজে জানানো হয়েছে, গানটি আজ রাত একটায় আসবে।  প্রকাশের জন্য মধ্যরাতকে কেন বেছে নেওয়া হলো? শিবু কুমার শীল বললেন, ‘শহুরে জীবনযাপনের মধ্যে আমরা যখন প্রকৃতির নিস্তব্ধতাকে বুঝতে চাই, সেই সময় কীভাবে বুঝতে চাই? যখন শহরের কোলাহল থেমে যায় তখনই হয়তো কিছুটা নীরবতা আসে। আটপৌরে শহুরে ব্যস্ততার মধ্যে ঝিঁঝি পোকার ডাক পেতে চাইলে আমাদের নিবিড় রাতের জন্য অপেক্ষা করার জন্য হয়।

দুই দশকের পথচলায় মেঘদলকে বরাবরই শহরকেন্দ্রিক গানে পাওয়া গেছে, শহরবন্দি অ্যালবামসহ বেশির ভাগ গানেই উঠে আগত শহরের কথা। শহুরে চেনা সংকীর্ণ রাস্তা ফেলে জঙ্গলের আলপথ ধরে হাঁটলেন শিবু-সুমনরা। রাস্তা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? শিবুর ভাষ্যে, ‘কাজটা করার সময় চ্যালেঞ্জ অনুভব করেছি। আমরা আমাদের তৃপ্তির জন্য, আনন্দের জন্য কণ্ঠসংগীত করি। মানুষ আমাদের  দুই যুগ ধরে শুনবে, এটি ভাবিনি। বনবিবি নিয়ে এই নিরীক্ষা ব্যর্থও থেকে পারে। ব্যক্তি লাইক না–ও করার জন্য পারে। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে কণ্ঠসংগীত করি। বাজার, খ্যাতি—এসবের বাইরে গিয়ে আমরা কাজটা করার জন্য চাই।’

এ বছরই মেঘদলের দুই দশক পূর্তি হচ্ছে, নভেম্বরের জমকালো অ্যারেঞ্জমেন্টে প্রদর্শন করবে ব্যান্ডটি। এর মধ্যে অ্যালুমিনিয়ামের ডানা অ্যালবামের বাকি গানগুলোও প্রকাশ করা হবে। মার্চে বিজয় বাংলা কনসার্টেও গাইবে মেঘদল।